Report -soumen (Dinkaal India)
ভারত সরকার আধার কার্ড ব্যবহারে নতুন নিয়ম চালু করেছে, যা নাগরিকদের জন্য আরও সহজ এবং নিরাপদ পরিষেবা নিশ্চিত করবে। আধার কার্ড ছাড়াই পরিষেবা গ্রহণের সুযোগ প্রদান করার লক্ষ্যে নতুন এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের মতে, এটি ডিজিটাল ভারতে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক এবং নাগরিকদের জন্য আরও সুবিধাজনক হবে।
নতুন নিয়ম কী?
নতুন নিয়ম অনুসারে, বিভিন্ন পরিষেবা গ্রহণের সময় আধার কার্ড বহন করার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র ফেস অথেন্টিকেশন বা মুখ স্ক্যান করলেই পরিচয় নিশ্চিত হয়ে যাবে। এটি বিশে
ষত সেসব নাগরিকদের জন্য উপকারী হবে, যাঁদের কাছে সর্বদা আধার কার্ড বহন করা সম্ভব হয় না।
ফেস অথেন্টিকেশন প্রযুক্তি চালু
এই নতুন নিয়মে ফেস অথেন্টিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এর মাধ্যমে নাগরিকদের পরিচয় যাচাই করা হবে উন্নত বায়োমেট্রিক সিস্টেমের সাহায্যে, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হবে। ফলে, ওটিপি, ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আইরিস স্ক্যানের ঝামেলা ছাড়াই সহজেই পরিচয় নিশ্চিত করা যাবে।
ফেস অথেন্টিকেশন পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে বয়স্ক এবং নিরক্ষর ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি বড় সুবিধা হবে। কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আইরিস স্ক্যান সঠিকভাবে কাজ করে না। নতুন এই ব্যবস্থা পরিচয় যাচাই প্রক্রিয়াকে আরও নির্ভুল এবং দ্রুত করবে।
নিরাপত্তা ও প্রতারণা প্রতিরোধ
এই প্রযুক্তি প্রতারণার সম্ভাবনা কমিয়ে আনবে, কারণ প্রতিটি মানুষের মুখের গঠন এবং আইরিস আলাদা হয়, যা নকল করা প্রায় অসম্ভব। আধার কার্ড সংক্রান্ত জালিয়াতি প্রতিরোধে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আধার কার্ডের তথ্য চুরি বা অন্য কারও নামে ব্যবহারের ঝুঁকি কমবে, কারণ শুধুমাত্র আসল ব্যবহারকারীই নিজের মুখ স্ক্যান করে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
নাগরিকদের জন্য সুবিধা
নতুন নিয়ম চালুর ফলে নাগরিকরা আরও সহজে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি পরিষেবা গ্রহণ করতে পারবেন। ব্যাংকিং, রেশন কার্ড, মোবাইল সিম ক্রয়, সরকারি অনুদান গ্রহণ, ট্যাক্স ফাইলিংসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এটি কার্যকরী হবে।
ফেস অথেন্টিকেশন কীভাবে কাজ করবে?
ফেস অথেন্টিকেশন প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ। নির্দিষ্ট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি উন্নত সফটওয়্যার ব্যবহার করে নাগরিকদের মুখমণ্ডলের ছবি তুলবে এবং তা সরকারের ডাটাবেসের সঙ্গে মিলিয়ে দেখবে।
এটি মূলত তিনটি ধাপে সম্পন্ন হবে:
মুখ স্ক্যান – ব্যবহারকারীর ছবি তোলা হবে।
ডাটাবেস যাচাই – সরকারের সংরক্ষিত তথ্যের সাথে তুলনা করা হবে।
পরিচয় নিশ্চিতকরণ – মিল পাওয়া গেলে সেবা প্রদান করা হবে।
ফেস অথেন্টিকেশন ব্যবহারের ক্ষেত্র
সরকারি ভাতা ও সুবিধা পাওয়া
ব্যাংকিং লেনদেন
মোবাইল সিম কেনা ও রেজিস্ট্রেশন
রেশন কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী গ্রহণ
ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল করা
নতুন নিয়মের চ্যালেঞ্জ ও সমাধান
নতুন নিয়মের সুবিধার পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
প্রযুক্তিগত সমস্যা – কিছু ক্ষেত্রে ফেস অথেন্টিকেশন সফটওয়্যার ভুল শনাক্ত করতে পারে।
সমাধান: উন্নত সফটওয়্যার আপডেট ও যাচাইকরণ ব্যবস্থা উন্নত করা।
গোপনীয়তা ও তথ্য সুরক্ষা – ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করা বড় চ্যালেঞ্জ।
সমাধান: শক্তিশালী সাইবার সিকিউরিটি ব্যবস্থা গ্রহণ ও তথ্য এনক্রিপশন ব্যবহার।
ডিজিটাল ইন্ডিয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে
এই পরিবর্তনের ফলে আধার কার্ড সঙ্গে বহন করার প্রয়োজনীয়তা কমবে এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি পরিষেবা গ্রহণ আরও সহজ হবে। এটি ডিজিটাল ইন্ডিয়া গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
নাগরিকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে ভারত সরকার আধার কার্ড সংক্রান্ত এই নতুন নিয়ম চালু করেছে, যা ভবিষ্যতে পরিচয় যাচাই ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক এবং কার্যকর করবে।