অনুসরণকারী/follow

SOCIAL MEDIA

Translate

মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

আগামী বছরের মধ্যে সোনার দাম বাড়বে নাকি কমে যাবে ?

 





সোনার দাম আগামী বছরে (2025) উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়তে পারে। বিভিন্ন বিশ্লেষক এবং অর্থনৈতিক সংস্থা আশা করছেন যে, সোনার দাম $2,700 থেকে $2,900 প্রতি ট্রয় আউন্সে পৌঁছাতে পারে।

গোল্ডম্যান স্যাচস জানিয়েছে যে সোনার দাম ২০২৫ সালের শুরুতে $2,900 পৌঁছাতে পারে, যা বর্তমান দামের তুলনায় ৯% বৃদ্ধি নির্দেশ করে। এই বৃদ্ধি প্রধানত নিম্ন সুদের হার এবং উন্নয়নশীল দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির থেকে উচ্চ চাহিদার কারণে হতে পারে। TD সিকিউরিটিজের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সোনার দাম 2025 সালের প্রথম ত্রিমাসিকে $2,495 হবে, যা পরবর্তীতে কিছুটা পরিবর্তন হয়ে $2,375 এ নেমে আসতে পারে।

এছাড়া, geopolitical উদ্বেগ, যেমন ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা, সোনার নিরাপত্তা হিসেবে চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির ক্রমবর্ধমান সোনার ক্রয়ও এই প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করবে।

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, যদি তহবিলের সুদের হার কম থাকে এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়, তাহলে সোনার দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে।

অতএব, আগামী বছরের মধ্যে সোনার দাম কতটা বৃদ্ধি পাবে তা বিভিন্ন বিশ্লেষকের পূর্বাভাসের উপর নির্ভর করছে, তবে সামগ্রিকভাবে তা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

ভারতের অন্যতম পুরনো এবং সবচেয়ে বিখ্যাত সোনার খনি কোনটি? আপনি কি জানেন?


কোলার গোল্ড ফিল্ডসে সোনার খনির ইতিহাস কয়েক শতাব্দী প্রাচীন। এখানে প্রাচীনকাল থেকে সোনা উত্তোলন করা হচ্ছিল বলে মনে করা হয়।


ঔপনিবেশিক যুগ: ব্রিটিশরা ১৯শ শতকের মাঝামাঝি কোলার গোল্ড ফিল্ডসে আধুনিক খনন প্রযুক্তি নিয়ে আসে। ১৯০০ সালের দিকে এটি ব্যাপকভাবে সোনা উৎপাদনে সফল হয়।

কোলার গোল্ড ফিল্ডস (Kolar Gold Fields বা KGF) হল ভারতের অন্যতম পুরনো এবং বিখ্যাত সোনার খনি, যা কর্ণাটক রাজ্যের কোলার জেলায় অবস্থিত। এটি ১৯শ শতকের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ইতিহাসের প্রেক্ষিতে এটি সোনার উৎপাদনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল।

খনির কার্যক্রম

কোলার গোল্ড ফিল্ডসে খনিগুলি গভীর খনন পদ্ধতির মাধ্যমে পরিচালিত হত। এটি ৩,০০০ মিটার (১০,০০০ ফুট) পর্যন্ত গভীর ছিল, যা এটিকে ভারতের অন্যতম গভীর সোনার খনি হিসাবে পরিচিত করে।

এখানে সোনার উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং এটি ভারতীয় সোনার উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে ওঠে।

বর্তমান অবস্থা ২০০১ সালে কোলার গোল্ড ফিল্ডসের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধের কারণ ছিল সোনার মূল্যহ্রাস এবং খনির কার্যক্রম পরিচালনার খরচ বাড়া।

বর্তমানে, কোলার গোল্ড ফিল্ডস একটি ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে পরিচিত, যেখানে পর্যটকরা খনির ইতিহাস ও তার সাংস্কৃতিক গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে আসেন।

কোলার গোল্ড ফিল্ডসের খনির ইতিহাস স্থানীয় মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এখানে সোনার খনি কেন্দ্রিক জীবনযাত্রা, সমাজ এবং অর্থনীতির একটি বড় অংশ ছিল।

দর্শনীয় স্থান

কোলার গোল্ড ফিল্ডসের আশেপাশে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যেমন:

কোলার গোল্ড ফিল্ডসের পুরানো খনির স্থাপনা

সপ্তমা দেবী মন্দির

ওল্ড কোলার শহর

কোলার গোল্ড ফিল্ডস ভারতের খনি শিল্পের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং এটি সোনার উৎপাদনের জন্য পরিচিত একটি ঐতিহাসিক কেন্দ্র।








 

শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বেতন পাচ্ছেন না রাজবংশী ভাষার শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বকেয়া বেতন দেওয়ার দাবিতে এদিন বালুরঘাটে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে গণ অবস্থান

 বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর:- 


দীর্ঘ ১০ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না রাজবংশী ভাষার শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বকেয়া বেতন দেওয়ার দাবিতে এদিন বালুরঘাটে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে গণ অবস্থান করে 'দি গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন'। 


এদিন বালুরঘাট শহরে মিছিল করে এসে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ অবস্থানে সামিল হন সংগঠনের সদস্যরা। 

জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ১৬ টি স্কুলে রাজবংশী ভাষায় পঠন পাঠনের জন্য ৪৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হয় গত ডিসেম্বর মাসে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দীর্ঘ ১০ মাস হয়ে গেলেও, এখনো পর্যন্ত বেতন পাননি ওই সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। 

বকেয়া বেতনের দাবিতে এদিন দি গ্রেটার কোচবিহার পিপল'স অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে গণ অবস্থান এবং পরবর্তীতে জেলা শাসক কে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিশ্বকর্মা প্রতিমা তৈরির শেষ প্রস্তুতি চলছে কুমোরটুলিতে

 ১২ সেপ্টেম্বর, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ চলতি মাসের ১৭ সেপ্টেম্বর সারা বাংলা জুড়ে নানান কলকারখানা সহ অনেক দোকান লোহা লক্কড়ের দোকান সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পূজিত হবেন কারিগরি দেবতা তথা বিশ্বকর্মা দেব।

এরপর মহালয়ার পূণ্য তিথিতে পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে মাতৃপক্ষের সূচনা হবে এবং শারদীয়া উৎসব দেবী দুর্গাপূজা শুরু হবে। চলতি সপ্তাহের অন্ত থেকেই মাতৃপক্ষের সূচনার সাথে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দূর্গো উৎসবের দামামা বেজে উঠবে।প্রসঙ্গত, গত ৪ আগে বছর করোনা আবহ তথা লকডাউনের জেরে বিশ্বকর্মা প্রতিমার বায়না তেমন না পাওয়ায় মাথায় হাত পড়ে ছিল কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের। 

তবে লকডাউন শিথিল হতেই গত ৩ বছরে মুখে হাসি ফুটেছে মৃৎশিল্পীদের। বাঙালির আবেগের ওপর অন্য কিছু হয় না কারণ বিশ্বকর্মা পূজা মানেই আগমনীর বার্তা বিশ্বকর্মা পুজো শুরু হওয়া মানে দেবী দুর্গার বোধন শুরু হওয়া তাই খুশির জোয়ারে ভাসতেই বিশ্বকর্মা পূজার মধ্য দিয়ে দূর্গাপূজার আবেগে ভাসবেন সকলে। তার আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীদের বিশ্বকর্মা প্রতিমার শেষ তুলির টান দিতে দেখা গেল, তাদের প্রস্তুতি ভীষণভাবে তুঙ্গে কারণ সপ্তাহতেই অর্ডার করা বিশ্বকর্মা প্রতিমা পৌঁছে দিতে হবে নানান জায়গায়। এই বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের দত্তপাড়া এলাকার মৃৎশিল্পী ভুবন শীল জানান, “লকডাউনের জেরে প্রতিমা বিক্রি ও বায়না না পেয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল।


কিন্তু ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল হতেই বর্তমানে ৩ বছর পর বিশ্বকর্মা পুজোর দিন এগিয়ে আসর আগে থেকে বিভিন্ন ক্লাব অন্যান্য কারখানা দোকান বড় বড় বাড়ি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছোট-বড় নানান ধরণের বিশ্বকর্মা প্রতিমা বায়না করে যাচ্ছেন, ১৬ তারিখে ডেলিভারি দিব তাই শেষ প্রস্তুতি চলছে, আমাদের দিকে ভগবান মুখ তুলে তাকিয়েছেন”। তবে বলাই বাহুল্য, প্রতিমা বিক্রির বায়না পেয়ে হাসি মুখে মনের আনন্দে কারিগরি দেবতা তথা বিশ্বকর্মা ঠাকুরকে তৈরি করেছেন মৃৎশিল্পীরা। বিশ্বকর্মা পূজার পর মহালয়ার পূণ্য তিথিতে দেবী দুর্গার বোধন শুরু হবে এবং মাতৃ পক্ষের সূচনা হবে তার সাথে সাথে তাল মিলিয়ে দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কলকারখানা সহ ক্লাব, বারোয়ারী ও বনেদি বাড়ি, বিভিন্ন জায়গায় বিশ্বকর্মা পূজা ও দূর্গাপূজা হবে আর তাতেই এই আনন্দ জোয়ারে গা ভাসাবেন আপামর বাঙালি। তাই তার আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন কুমোরটুলিতে কারিগরি দেবতা তথা বিশ্বকর্মা প্রতিমা তৈরির শেষ প্রস্তুতি চলছে তুঙ্গে। দিনরাত এক করে ঘেমে নেয়ে প্রতিমা তৈরি করে চলেছেন মৃৎশিল্পীরা। তাদের ঘরে এখন শুধুই ব্যস্ততা প্রতিমা তৈরীর জন্য।

রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪

দক্ষিণ দিনাজপুরে তিলোত্তমার ন্যায় বিচারের দাবিতে পদযাত্রা করলেন শিক্ষক সমাজ

 #rgkarprotest #rgkarhospital দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুরে রবিবার তিলোত্তমার ন্যায় বিচারের দাবিতে পদযাত্রা করলেন শিক্ষক সমাজ । এদিন হরিরামপুর ব্লকের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা তিলোত্তমার ন্যায় বিচারের দাবিতে পথে নামলেন । এদিন এই শিক্ষকদের পদযাত্রা সারা হরিরামপুর পরিক্রমা করে পরিশেষে হরিরামপুর চৌপথি এসে শেষ হয় । সেখানে প্রতিটি শিক্ষক ও শিক্ষিকা ত্রিলোত্তমার ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন । এদিনের এই পদযাত্রাকে ঘিরে কোন রকমের অপ্রীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সেজন্য হরিরামপুর থানার আইসি অভিষেক তালুকদারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী হরিরামপুর চৌপথি তে মোতায়েন করা হয়



পুরো ভিডিও দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন 


রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪

জর্জিয়া ও আজারবাইজানের ককেশাস পর্বতমালায় অভিযান শেষে পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাস অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন

 জর্জিয়া ও আজারবাইজানের ককেশাস পর্বতমালা


২৭ শে জুলাই, ২০২৪। বিমানে রওনা দিই কলকাতা থেকে, উদ্দেশ্য দিল্লি হয়ে আজারবাইজানের রাজধানী বাকু। প্রথম দু একদিন আশপাশ ঘুরে নিলাম। ২রা আগস্ট, ২০২৪, শুক্রবার সকালবেলায় একটা মিনি ভ্যানে চেপে আমরা বেরিয়ে পড়লাম পর্বতাভিযানে। গন্তব্য বাকু থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরের কুবা হয়ে আরও পঞ্চাশ কিলোমিটার এগিয়ে খিনালিগ গ্রাম। প্রথমে কাস্পিয়ান সাগরের পার ঘেঁষে উত্তরমুখী জাতীয় সড়ক পথে এগিয়ে এরপর সে পথ ছেড়ে বাঁদিকে ঘুরে পৌঁছলাম কুবা। খিনালিগে দলের তিনজনকে রেখে অভিযানের চার সদস্য এগিয়ে চললাম শাহদাগ (Shahdag) বেসক্যাম্পের দিকে। 


খিনালিগের পর রাস্তা বলতে কিছুই নেই। পুরোপুরি ভাঙাচোরা একদম মাটির রাস্তা, মাঝে মাঝে নেমে যেতে হচ্ছে খরস্রোতা নদীর বুকে, কখনওবা পাহাড়ি ঘাসের ঢালের মাঝ দিয়ে পথ। পঞ্চাশ-ষাট বছরের পুরনো এক প্রাচীন জিপ আমাদের এক জায়গায় নামিয়ে দিল। সেখান থেকে শুরু হলো ট্রেকিং। সেদিনই আরো প্রায় ঘন্টা দেড়েক ট্রেক করে পৌঁছলাম সন্ধ্যা সাড়ে আটটায় পৌঁছলাম শাহাদাগ বেসক্যাম্প (২,৮৫০ মিটার)। এদেশে সকালের আলো সাড়ে পাঁচটার মধ্যে ফুটে গেলেও রাতে আটটা পর্যন্ত বেশ পরিস্কার আলো থাকে। ঠিক হলো সেদিনই গভীর রাতে রওনা দেব শাহদাগ শৃঙ্গ আরোহণের উদ্দেশ্যে।


শাহদাগ (৪,২৪৩ মিটার/১৪,০০২ ফুট), এলাকায় "পর্বতের রাজা" বলে খ্যাত, আজারবাইজানের ভৌগলিক সীমানার মধ্যে অবস্থিত সর্বোচ্চ পর্বত। এটি বৃহত্তর ককেশাস পর্বতমালার একটি শৃঙ্গ, যা আজারবাইজানের কুসার জেলায়, রাশিয়ার সীমানার কাছে অবস্থিত। ককেশাসের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ রাশিয়ার এলব্রুস (৫,৬৪২ মিটার/ ১৮,৬১৯ ফুট)। আজারবাইজানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বাজারদুজু (৪,৪৬৬ মিটার/১৪,৭৩৮ ফুট), যা রাশিয়ার সীমান্তে অবস্থিত। শাহদাগ আরোহণ পর্বতারোহীদের জন্য একটি বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ। 

৩রা আগস্ট ভোররাত সাড়ে তিনটেয় রওনা দিয়ে দুর্গম এই শাহাদাগ পর্বত শীর্ষে পৌঁছই সকাল ১১টা ১০ মিনিটে। আরোহন করি - মলয় মুখার্জি, অভিজিৎ রায়, কিরণ পাত্র ও আমি - দেবাশিস বিশ্বাস। প্রায় আধঘন্টা কাটাই শীর্ষে। তারপর কঠিন সেই পথ অতিক্রম করে বেস ক্যাম্পে নেমে আসি বিকেল চারটেয়।

এবার আমাদের লক্ষ্য আজারবাইজানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বাজারদুজু। পরদিন শাহাদাগ বেস ক্যাম্প গুটিয়ে নেমে আসি নিচে। সেখানে অপেক্ষা করছিল জিপ। সেই জিপ ফের পার্বত্য পথ পার করে আমাদের পৌঁছে দিল বাজারদুজু বেস ক্যাম্পের নিচের এক পাহাড়ি ঢালে। সেখান থেকে ঘন্টা দুয়েক ট্রেকিং শেষে পৌঁছই বাজারদুজু বেস ক্যাম্প (৩,১০০মিটার)।

বাজারদুজু পর্বত (৪,৪৬৬ মিটার/১৪,৬৫২ ফুট) বৃহত্তর ককেশাস পর্বতমালায় রাশিয়ার দাগেস্তান এবং আজারবাইজানের সীমানায় অবস্থিত। আজারবাইজানি ভাষায় বাজারদুজু শব্দের অর্থ "বাজারের চত্বর", আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে এটি একটি নির্দিষ্ট ল্যান্ডমার্ক হিসাবে "বাজারের দিকে বাঁক নাও"। মধ্যযুগে এই শৃঙ্গের পূর্ব দিকে অবস্থিত শাহনাবাদ উপত্যকায় বার্ষিক বৃহৎ বহুজাতিক মেলা অনুষ্ঠিত হতো বলে হয়ত এর এমন নাম।

বেলা আড়াইটা নাগাদ পৌঁছাই বেস ক্যাম্প। পরদিন, ৫ই আগস্ট, ভোর রাত তিনটেয় রওনা দিলাম শীর্ষারোহণের উদ্দেশ্যে। একটানা আরোহন শেষে সকাল ন'টার মধ্যে আমরা চারজনই পৌঁছে গেলাম বাজারদুজু শীর্ষে। ইচ্ছা ছিল বাজারদুজুর একদম পাশের শৃঙ্গ ‘জাফর” (Zafar) আরোহণের। কিন্তু অতিসম্প্রতি জাফর শৃঙ্গের মাথায় রাখা ফলক চুরি হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে কাউকে জাফর আরোহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আমাদের সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে হলো। বেলা ১২:০০ টায় নেমে এলাম বেস ক্যাম্প। সেদিনই তাঁবু গুটিয়ে ট্রেকিং করে নিচে নেমে জিপ ধরে খিনালিগ হয়ে বাকু পৌঁছলাম ৬ তারিখ ভোররাত আড়াইটেয়। 


এরপরের লক্ষ্য জর্জিয়ার ককেশাস পর্বতমালায় অভিযান। কিন্তু জর্জিয়া সরকার মলয়ের ভিসা বাতিল করে দেওয়ায় ও আমাদের সাথে যেতে পারল না। ৮ ই আগস্ট পৌঁছই জর্জিয়ার রাজধানী টিবিলিস। দশ তারিখ শুরু হয় অভিযান, এবারের লক্ষ্য জর্জিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় ও তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কাজবেক (Kazbek, ৫০৫৪ মি), স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ মহৎ চরিত্র। টিবিলিস ছেড়ে আমরা পৌঁছাই ১৫০ কিমি উত্তরের স্টেপান্সমিন্ডা (১,৭০০ মি)। পরদিন শুরু হয় আমাদের ট্রেকিং। ১৭০০ মিটারের স্টেপান্সমিন্ডা থেকে আট ঘণ্টা ট্রেকিং করে উঠে যাই ৩৭০০ মিটার উচ্চতার বেথেলমে হাট বা মেট্রো স্টেশন। ১৩ তারিখ ভোররাত দুটোর সময় শুরু হয় শীর্ষ অভিযান। অবশেষে দীর্ঘ প্রায় ১০ ঘণ্টা নিরলস চলার পর, তীব্র হাওয়ার দাপট ও তুষার ঝাপটার মধ্যেই পৌঁছই কাজবেক শীর্ষে। আরোহন করি - অভিজিৎ রায়, কিরণ পাত্র ও আমি। সেদিনই মেট্রো স্টেশন নেমে আসি বিকাল ৫ টায়। এরপর ফেরা স্টেপান্সমিন্ডা হয়ে টিবিলিস। 

অভিযান সম্পূর্ণ হল। সম্ভবত ভারতবর্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান এই প্রথম। সফলভাবে আরোহন হলো জর্জিয়া ও আজারবাইজানের ককেশাস পর্বতমালার তিনটি শৃঙ্গ।